আরমাডিলো একটি
দেখতে ইঁদুরের বা বনরুই ও শজারুর কাছাকাছি প্রাণী হলেও এদের সব প্রজাতি
থেকেই আরমাডিলো আলাদা। এটি একটি বিচিত্র প্রাণী এই প্রাণী জীবনের এক এক সময়ে এক এক
রূপ ধারণ করে। নিম্নে আরমাডিলো সম্পর্কে অল্প বিস্তর যা জানা গিয়েছে তা আপনাদের
সামনে তুলে ধরলাম।
আরমাডিলো মাটিতে গর্ত খুগেঁ
বসবাস করে এমন একটি প্রাণী। এটি
ড্যাসিপোডিডি পরিবারভুক্ত স্তন্যপায়ী প্রাণী। ড্যাসিপোডিডি
হচ্ছে সিনগুলাটা
বর্গের একমাত্র অস্তিত্ববান পরিবার। এদের প্রধান বিশেষত্ব হচ্ছে দেহের
উপরিভাগের বর্মসদৃশ শক্ত ত্বক। বাচ্চারা কোমল ত্বক নিয়ে জন্মগ্রহণ করে।
এদের ত্বক শক্ত হতে কয়েক সপ্তাহ লেগে যায়।বর্তমানে প্রায় ১০টি গণে (জাত) ২০ প্রজাতির
আরমাডিলো টিকে আছে। আরমাডিলোর দেহের গড় দৈর্ঘ্য ৭৫ সেন্টিমিটার। বৃহৎ আরমাডিলোর দৈর্ঘ্য ১
দশমিক ৫ মিটার এবং ওজন ৫৯ কেজি। এরা
এদের ধারালো নখ দ্বারা বসবাসের জন্য গর্ত এবং খাবারের জন্য
মাটি খোঁড়ে। আরমাডিলোর
দর্শন ক্ষমতা খুবই দুর্বল। এদের পা খাটো হলেও এরা দ্রুত দৌড়াতে পারে।
এদের সামনের পায়ে তিন থেকে পাঁচটি এবং পেছনের পায়ে পাঁচটি নখযুক্ত আঙুল
রয়েছে। এদের দেহের বেড় বরাবর বলয় রয়েছে। বলয়ের সংখ্যা প্রজাতিভেদে
বিভিন্ন। নয় বলয়যুক্ত আরমাডিলো নদীর ধারে আর্দ্র মাটিতে গর্ত খুঁড়তে
পছন্দ করে। এদের দেহের উপরিভাগে বর্মসদৃশ শক্ত ত্বক বা খোল রয়েছে।
কিন্তু দেহের নিচের অংশের ত্বক কোমল ও লোমযুক্ত। বর্মের মতো শক্ত ত্বক
এদের আত্মরক্ষার কাজে লাগে। দক্ষিণ আমেরিকার তিন বলয়যুক্ত আরমাডিলো প্রতিরক্ষার
জন্য এদের শক্ত ত্বকের ওপরই ভরসা করে। বিপদে পড়লে এরা দেহকে পাকিয়ে
বলের মতো করে। নয় বলয়যুক্ত আরমাডিলো কোনো কারণে চমকে উঠলে শূন্যে লাফ
দেয়। আরমাডিলো পানির নিচে প্রায় ৬ মিনিট ডুব দিয়ে থাকতে পারে। এদের বর্মের
মতো শক্ত ত্বকের কারণে এরা পানিতে ডুবে যায়। তবে এরা পাকস্খলীকে বায়ু
দ্বারা ফুলিয়ে দ্বিগুণ করে পানিতে সাঁতার কাটতে পারে।
স্বভাব
আরমাডিলো নি:সঙ্গ প্রাণী। এরা কখনো অন্য প্রাপ্তবয়স্ক
আরমাডিলোর সাথে গর্ত ভাগাভাগি করে না।
খাদ্য
আরমাডিলোর খাবার প্রধানত নানারকম কীট এবং অন্যান্য অমেরুদণ্ডী
প্রাণী। এদের কিছু প্রজাতি পিঁপড়া খেয়ে জীবন ধারণ করে।
বংশবৃদ্ধি
আরমাডিলোর গর্ভধারণ সময় ৬০ থেকে ১২০ দিন এবং অধিকাংশ আরমাডিলো
একত্রে চারটি
বাচ্চা প্রসব করে। ৩ থেকে ১২ মাস বয়সে এরা প্রজনন ক্ষমতা অর্জন করে।